বাংলাদেশ এভিয়েশনের ইতিহাসে যেকোনো বেসামরিক বিমান সংস্থার জন্য ১০ বছরের মাইল ফলক সময়কাল পূরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সুতরাং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জন্য ২০২৪ এমনি একটি তাৎপর্যপূর্ণ সাল।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ১৭ জুলাই ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে ১০ বছর সময় অতিক্রম করছে। ১০ বছরের মাইল ফলক সময়কালটি বাংলাদেশ এভিয়েশনের ইতিহাসে পূরণ করতে পেরেছে এমন বেসামরিক এয়ারলাইন্সের সংখ্যা বেশি নাই, কিন্তু এই সময়টা সাফল্যের সঙ্গে অতিক্রম করে বেশি দিন টিকে থাকতে পেরেছে এমন বিমান সংস্থার সংখ্যা আরও কম। তাই বিভিন্ন ভ্রমণ শিল্প বিশেষজ্ঞ ও এর সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলোর চাকরিজীবীরা এখনও বোঝার চেষ্টা করছে যে দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর ১০ বছর সময়কাল কি ‘অশনি না শুভ সংকেত’।
আজ বাংলাদেশ এভিয়েশনের প্রায় ৫২ বছরের ইতিহাসে দীর্ঘমেয়াদে সাফল্য ধরে রাখতে ব্যর্থ এয়ারলাইন্সের সংখ্যা লজ্জাজনক। কিছু এয়ারলাইন্স যারা এই কঠিন কাজটি সম্পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জিএমজি, ইউনাইটেড, রিজেন্ট, বেস্ট এয়ারের মতো প্রায় ৮ থেকে ৯টি এয়ারলাইন্স। বর্তমানে জাতীয় বিমানসংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর সাথে মাত্র তিনটি বেসরকারী বিমানসংস্থা বাংলাদেশে আকাশ পরিবহন ব্যবসায় জড়িয়ে আছে, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও এয়ারঅ্যাস্ট্রা।
বাংলাদেশের বেসরকারী বিমানসংস্থার জন্য ১০ বছর সময়কালে পৌঁছানো কোনোভাবেই সহজ ব্যাপার না। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ১০ বছর অতিক্রমকালীন সময়ে বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। জিএমজি এয়ারলাইন্স ১০ বছর অতিক্রম করার পর ব্যবসায় নিম্নমূখী প্রবণতা দেখতে পারে এবং পরে তা ১৪ বছরের সময় একেবারেই বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বর্তমানে নভোএয়ার ১১ বছরের অধিক সময়কাল অতিক্রম করছে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু করার পর থেকেই ব্যবসা থেকে সেবাকেই প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। আর ইতিমধ্যে যাত্রীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২০১৪ সালের পর থেকেই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রতিমূহুর্তে বিমানবহরে নতুন নতুন উড়োজাহাজ ও আকর্ষণীয় গন্তব্য যোগ করছে একটা লক্ষের উপর দৃষ্টি টিকায় রেখে, যা হচ্ছে সেবার মাধ্যমে বাংলাদেশী নাগরিকরা বিশ্বের যেসকল গন্তব্যে অবস্থান করছে, দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছে, সেই সকল রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সেবা দেয়ার মানসে ইউএস-বাংলা অটল থাকবে।
ভারতের চেন্নাই, চীনের গুয়াংজু, মালদ্বীপের রাজধানী মালের মতন আরও কিছু অন্যতম রুটগুলোতে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সকে বাংলাদেশ এভিয়েশন সব সময়ই মনে রাখবে। এছাড়া কলকাতা, জেদ্দা, দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি, মাস্কাট, দোহা, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, ব্যাংকক রুটেও ইউএস-বাংলা ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
২টি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলার বহরে বর্তমানে ৪৩৬ আসন বিশিষ্ট দুইটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০, নয়টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, দশটি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ ও তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে। বর্তমানে বিমানের সংখ্যা অনুযায়ী ইউএস-বাংলা বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম এয়ারলাইন্স।
আমাদের সকলের কাম্য, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জন্য ১০ বছর সময়কাল যেন অশনি সংকেত না হয়ে শুভ সংকেত রূপে স্থায়ী হয়।
আরো ভ্রমণ নিউজ পেতে > Travel News | British Bangla Travel