বাংলাদেশে চালু হবে টাকার পে কার্ড যেইটা দিয়ে দেশের ভিতরে কেনাকাটাসহ বিভিন্ন বিল পরিশোধ করা যাবে তার পাশাপাশি ভারত ভ্রমণের সময় রুপিতে খরচ করার সুযোগও পাবেন। ডলার বাঁচাতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ উদ্যোগ নিচ্ছে।
গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার গত রোববার, ১৮ জুন, বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ১ম ষাণ্মাসিকের জন্য (জুলাই-ডিসেম্বর-২০২৩) নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে এ তথ্য জানান।
তালুকদার জানান, আমরা টাকার একটি পে-কার্ড চালু করছি এবং এটাকে ভারতের রুপির সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। এ কার্ডের মাদ্ধমে গ্রাহকরা বাংলাদেশে ডেবিট কার্ডের সুবিধা পাবেন। আবার ভারতে গিয়েও এই কার্ড দিয়েই ভ্রমণ কোটায় ১২ হাজার ডলার খরচ করতে পারবেন। ফলে দুইবার মানি চেঞ্জে লোকসান আর হবে না।
অর্থাৎ ভ্রমণে যেতে হলে প্রথমে টাকা থেকে ডলারে কনভার্ট করতে হয়, পরে ভারতে গিয়ে ডলার রুপিতে কনভার্ট করতে হয়। টাকার পে-কার্ড থাকলে আর দুইবার মানি চেঞ্জ করতে হবে না। এতে কমপক্ষে ৬ শতাংশের মতো খরচ কমবে। ভারতে প্রতি বছর যত বাংলাদেশি পর্যটক ঘুরতে যান তাদের অনেক খরচ কমে যাবে।
তিনি আরও জানান, এটা কারেন্সি সোয়াপ হবে না। কারণ এখানে দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর মাঝে মাঝে কোনো লেনদেন হবে না। এখানে গ্রাহক লেনদেন করবে।
আন্তর্জাতিক এক সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ভারতে ভ্রমণকারী পর্যটকদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ থেকে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে ২১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৫৭ জন বাংলাদেশী পর্যটক ভিসায় ভারতে গেছেন।
ড. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ, মুদ্রানীতি পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, এ কে এম সাজেদুর রহমান খান, বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র আবুল বশরসহ গবেষণা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থ সরবরাহ কমাতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া টাকার মান বাড়াতে নীতিগত সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে ঋণের সুদের হারের ৯ শতাংশ সীমা তুলে নিয়ে সুদ গণনার নতুন কাঠামো ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদহারের সীমাও তুলে দেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়মে ব্যাংক ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ১২ শতাংশ আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ১২ দশমিক ১২ শতাংশ। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি এসএমই এবং ভোক্তা ঋণ তদারকি খরচের জন্য অতিরিক্ত ১ শতাংশ উচ্চ সুদ নিতে সক্ষম হবে।
প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান বলেন, ১৮২ দিনের ট্রেজারি বিলের গড় হারে ব্যাংক ৩ শতাংশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৫ শতাংশ সুদ যোগ করতে পারে। এটাই হবে সর্বোচ্চ সুদের হার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলে গড় সুদ ছিল ৭ দশমিক ১২ শতাংশ। এর মানে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদহার হবে ১০ দশমিক ১২ শতাংশ আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হবে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ১২ শতাংশ।
আরো ভ্রমণ নিউজ পেতে > Travel News | British Bangla Travel